শফিউর রহমান কামাল ঃ*গত ২৪ ঘন্টায় মোবাইল কোর্ট ও জনসচেতনতা কার্যক্রমের তথ্যঃ*
একনজরে গত ২৪ ঘন্টার মোবাইল কোর্ট অভিযানের তথ্য
মোট মোবাইল কোর্টঃ ০৪ টি
মোবাইল কোর্টসহ মোট সচেতনতা কার্যক্রমঃ ১৪টি
মোট মামলাঃ ১৪ টি
মোট জরিমানাকৃত প্রতিষ্ঠানঃ ০৬ টি
মোট জরিমানাকৃত ব্যক্তিঃ ০৮ জন
মোট কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিঃ ০
সর্বমোট জরিমানা আদায়ঃ ৩০,৪০০ টাকা
আজ সকাল
কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে বরিশাল জেলার জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব এস, এম, অজিয়র রহমান এঁর নির্দেশনায় বরিশালের সাগরদী বাজার ও নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ২৭ জুন, ২০২০ সকাল ১১:০০টা থেকে দুপুর ০১:৩০টা পর্যন্ত মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শরীফ মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন। অভিযানকালে মাস্ক না পরা, ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা না রাখা ও স্বাস্থ্যবিধি না মেনে ক্রেতা জমায়েত করার অপরাধে নগরীর বগুড়া রোডে নিউ আল বারাকা মটরসকে ৫,০০০/- টাকা, ওয়ালটন শোরুম (মেসার্স ফ্লোরা ট্রেডার্স) কে ৫,০০০/- টাকা ও আমতলা মোড়ে 1 to 99 plus কে ৩,০০০/- টাকা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানা ও পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করার অপরাধে বাজার ডেলিভারি ডট কম নামক একটি সুপারশপকে ৭,০০০/- টাকা অর্থদন্ড প্রদান করে তাৎক্ষণিক আদায় করা হয়। এছাড়া বগুড়া রোড, নতুন বাজার, সিএন্ডবি রোড ও আমতলা এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রচারণা করা হয় ও যাদের মাস্ক নেই তাদের জেলা প্রশাসক বরিশাল মহোদয়ের পক্ষ হতে মাস্ক বিতরণ করা হয়। অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম ।
অপরদিকে একইসময়ে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণে বরিশাল মহানগরীর বগুড়া রোড ও নতুন বাজার এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মনিরা খাতুন। এসময় সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া ও জনসাধারণের মাস্ক ছাড়া চলাচল, এই দুই ধরনের অপরাধকে আমলে নিয়ে মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর অধীনে দণ্ডবিধ, ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারায় ০২ প্রতিষ্ঠান ও ৪ ব্যক্তিকে পৃথক ০৬টি মামলায় মোট ৩৯০০ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। পাশাপাশি কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়। অভিযানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ এর একটি টিম।
গৌরনদী উপজেলায় মোবাইল কোর্টঃ
আজ সকাল ১০:০০ ঘটিকার সময় রাক্ষুসে পিরানহা মাছ বিক্রির গোপনীয় তথ্যের ভিত্তিতে খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বাকাই বাজারে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করেন বরিশাল জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আলী সুজা। অভিযানকালে প্রায় ১০০ কেজি রাক্ষুসে পিরানহা মাছ জব্দ করা হয় এবং মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইনের ৩ ধারা( মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ বিধিমালার ১৬ নং বিধি) লঙ্ঘন করায় একই আইনের ৫(১) ধারা মোতাবেক বিক্রেতাকে ৫০০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। ক্রেতা ও বিক্রেতার ভাষ্য মতে বাজারে দেশি রুপচাদার নামে বিক্রয় হচ্ছে ক্ষতিকারক ও নিষিদ্ধ ঘোষিত পিরানহা মাছ। উল্লেখ্য পিরানহা নামের মাছটি মূলত আমাজন নদীর একটি ভয়ঙ্কর মাছ। মানুষখেকো হিসেবেও এই মাছটি পৃথিবীতে পরিচিত। পিরানহা মাছটি প্রথম আফ্রিকায় বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হয়। সে দেশে পিরানহা মাছ উৎপাদন হওয়ার পর মাছটির ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে জানা গেছে, মাছটি মানুষের খাবার উপযোগী নয়, এটি বিষাক্ত মাছ। একপর্যায়ে এই মাছ বাংলাদেশে চলে আসে। পিরানহা মাছ খেলে মানবদেহের মারাত্মক ক্ষতি হয়। বিশেষ করে কিডনী ও অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অকেজো হয়ে পড়ে। এসব মাছ রান্না করলে অত্যধিক তাপে বিষের উপাদান এক অবস্হা থেকে অন্য অবস্হায় রূপান্তর হতে পারে। কিন্তু এতে বিষ খুব একটা তারতম্য হয় না। যারা মনে করেন রান্না করলে বিষ নষ্ট হয়ে যায় তা নিতান্ত ভুল ধারণা। এসব মাছ খেলে সাময়িক ও দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বড় বড় দাঁত বিশিষ্ট পিরানহা মাছ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হওয়ায় ২০০৭ সালে এ মাছ সংরক্ষণ, বিপনন, প্রজনন ও প্রদর্শণ বাংলাদেশে সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
অভিযানকালে জব্দকৃত মাছ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আলী সুজার সামনেই ধ্বংস করা হয়। অধিকন্ত বাজারে আগত ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পিরানহা মাছের ক্ষতিকারক দিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয় এবং বিক্রেতাদের এই মাছ বিক্রি বন্ধের ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করা হয়। এছাড়া দুপুর ১২:০০ থেকে ০১:০০ গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড ও বন্দর এলাকায় বিকাল ০৪:০০ টার পর দোকান বন্ধ রাখার ব্যাপারে প্রচারণা চালানো হয়। উক্ত অভিযানে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও গৌরনদী থানা পুলিশ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।
গতকাল বিকালঃ
স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন বাস্তবায়ন ও নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব রক্ষা নিশ্চিতকরণে গতকাল বিকেল ৫:০০ ঘটিকা থেকে লঞ্চঘাটে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ জিয়াউর রহমান। অভিযান চলাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে যাতায়াতের জন্য সচেতন করা হয়। লঞ্চের টিকেট কাউন্টারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে টিকেট বিক্রি নিশ্চিত করা হয়। এসময় মাস্ক ব্যবহার না করায় ৩ জন ব্যক্তিকে দন্ডবিধি, ১৮৬০ এর ২৬৯ ধারায় মোট ১৫০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। অভিযানে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি টিম সহায়তা করে।
এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের জন্য জেলার প্রতিটি মোড়ে মোড়ে এবং এলাকার গলিতে গলিতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। জনগণকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষায় জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব এস, এম, অজিয়র রহমান সদা সচেষ্ট এবং তাঁর নির্দেশনায় নিয়মিত জনস্বার্থে বরিশাল জেলা প্রশাসন কতৃক পরিচালিত এ ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।