খেয়ালি ঋতুর ফাঁদে বাড়ছে জ্বর-সর্দি-কাশি- ডায়রিয়ার রোগী
|
![]() মোঃ নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ কিছুতেই ছন্দে ফিরছে না আবহাওয়া! বর্ষাকালের তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে সব বয়সি মানুষ। ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ফলে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কমিউনিটি ক্লিনিক, চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত চেম্বার ও ঔষধের দোকানে হঠাৎ রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। এদিকে রোগীদের ভোগান্তিতে নতুন মাত্র যোগ করেছে প্যারাসিটামল গ্রুপের ঔষধ সংকটের সাথে দাম বৃদ্ধি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, শুধু করোনা ভাইরাস নয়, ঋতু পরিবর্তনেরও প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এ কারণে সবখানেই এখন জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত রোগী বাড়ছে। গত এক সপ্তাহে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্বর ও সর্দির প্রায় বর্হিবিভাগে ২৫০০ রোগী সেবা নিয়েছে ও অন্তঃবিভাগে ৩০০ রোগী চিকিৎসা নেয়। সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা যায়, বহির্বিভাগে রোগীর দীর্ঘ লাইন। আন্তঃবিভাগে শয্যা খালি না থাকায় মেঝেতেই শুয়ে আছে অনেক রোগী। এদিন জ্বর ও সর্দির প্রায় ৪৫০ জন রোগী সেবা গ্রহণ করে। যা বর্হিবিভাগে সেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে জ্বর-সর্দির রোগীর সংখ্যা ছিল শতকরা ৮০ ভাগ। আর অন্তঃবিভাগে ভর্তি হয়ে সেবা নেওয়া রোগীদের মধ্যে জ্বরের রোগী শতকরা ৪০ ভাগ। বেডে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় অনেকেই মেঝেতে থেকে সেবা নিচ্ছেন। হঠাৎ জ্বরের রোগী বৃদ্ধি পাওয়ায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ হাসপাতালে তাঁদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফ, স্যাকমো ও স্বাস্থ্যকর্মীগণ। হাসপাতালে সেবা নিতে আসা গোয়ালডিহি গ্রামের জেসমিন আক্তার বলেন, তিনি তিন দিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শরীরে প্রচণ্ড ব্যথায় ভুগছেন। এতদিন দোকান থেকে ওষুধ কিনে খেয়েছেন। এতে কোনো উপকার না পাওয়ায় হাসপাতালে এসেছেন। আঙ্গারপাড়া গ্রামের নদী পাড়ার কৈলানী রায় বলেন, তার দুই বছরের সন্তানের এক সপ্তাহ ধরে জ্বর ও সর্দি। ওষুধে কোনো কাজ হচ্ছে না। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হাসপাতালে এসেছে। পাকেরহাট এএফআর মেডিসিনি মার্টের সত্ত্বাধিকারী বখতিয়ার উদ্দিন বলেন, জ্বরের রোগী বাড়ার সাথে বাজারে কিছু কোম্পানির প্যারাসিটামল গ্রুপের ঔষধ সংকট থাকলেও অধিকাংশ কোম্পানির এই গ্রুপের ঔষধ পর্যাপ্ত আছে। তিনি আরো বলেন, গতকাল থেকে অনেক ঔষধের দাম বৃদ্ধি করেছে কোম্পানি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনে তীব্র গরমের কারণে জ্বর সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা হাসপাতালে অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালে ওষুধ সরবরাহ ঠিক আছে। তবে জনবল সঙ্কটে অনেক রোগীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও আমরা রোগীদের সেবায় সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। |