শহীদ মিনার নেই বরিশালের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
|
![]() লিটন বাইজিদ :: আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি মহান ভাষা দিবস। দেশব্যাপী ভাষা দিবস পালনে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। তরুণ প্রজন্মকে ভাষার সঠিক তাৎপর্য জানাতে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ২১ ফেব্রুয়ারি থাকে বিভিন্নরকম কর্মসুচি। কিন্তু যেখানে বিদ্যালয় আছে শহীদ মিনার নেই, সেখানে কি ভাষা দিবস পালন হবেনা? খোজ নিয়ে যানা যায় সে সব প্রতিষ্ঠানে দায়সারা ভাবে পালন করে মহান ভাষা দিবস। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানতে পারছে না ভাষার সঠিক তাৎপর্য, জানতে পারছে না ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা। দুই দিন বাদেই ২১ ফেব্রুয়ারি। ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোর দিন। এদিন দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানায়। তবে প্রতিবারের মতো এবারও সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অনেক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে গেলে দেখাযায়, বরিশাল নগরীর কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নেই কোন শহীদ মিনার, বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা আর্থিক সংকট ও পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় এতদিন শহীদ মিনার করতে পারিনি, তবে খুব শিগ্রই আমরা শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ শুরু করব। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও শিক্ষার্থীদের র্যালি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে যাব, কবিতা আবৃত্তি ও আলোচনা সভা করব। নগরীর মথুরানাথ স্কুলে গিয়ে দেখা যায় স্কুল মাঠে পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও নেই কোন শহীদ মিনার কারন জানতে স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ফোন দিলে ব্যস্ততার কারণে তিনি কথা বলতে পারেননি। নগরীর আলেকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নব আদর্শ বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত জায়গা থাকলেও নেই কোন শহীদ মিনার। এছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়নি কোন শহিদ মিনার। ৫ম শ্রেণির এক ছাত্র জানায়, শহীদ মিনার না থাকার কারণে ২১ ফেব্রুয়ারি ভালোভাবে পালন করতে পারি না। ২১ ফেব্রুয়ারির দিন আমাদের বড় ভাইয়েরা বাঁশ, ইট, কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে। আমরা ওখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাই। এসময় শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কর্তৃপক্ষের কাছে একটি শহীদ মিনার আবেদন করেন। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, একটা শহীদ মিনার করতে আর কত টাকা লাগে, কমিটি কিংবা জনপ্রতিনিধি মিলে করতে পারে তারা তা না করে সরকারের দিকে তাকিয়ে আছে।এসময় তিনি আরও বলেন ১৯৫২ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে শহীদ মিনারের প্রয়োজন। বর্তমান প্রজন্ম ২১ ফেব্রুয়ারি কেনো পালন করে সেসব বিষয়ে জানতে হবে। যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই সেখানে শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী বরিশালে কলেজ রয়েছে ৯২ টি তার মধ্যে শহীদ মিনার আছে ৬৮ টিতে এবং নেই ২৪ টিতে, স্কুল রয়েছে ৪৫২ টি তার মধ্যে শহীদ মিনার আছে ৩৭০ টিতে এবং নেই ৮২ টিতে, মাদ্রাসা আছে ২৩৫ টি তার মধ্যে শহীদ মিনার আছে ৩০ টিতে এবং বাকি ২০৫ টিতে শহিদ মিনার নেই। সবার মধ্যে পিছিয়ে আছে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানগুলি। বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সরকারি স্কুল-কলেজে ফান্ড থাকার কারণে প্রায় সবগুলোতেই শহীদ মিনার রয়েছে, তবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি ফান্ড না থাকায় স্কুল কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছায় কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার গড়ে উঠেছে আবার নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে অনেক জায়গায় শহীদ মিনার নির্মাণ করতে সক্ষম হয়নি স্কুল কর্তৃপক্ষ। বরিশাল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ( ডিপিইও) আব্দুল লতিফ মজুমদার বলেন, বর্তমানে বরিশাল জেলায় ১৫৯১ টি প্রাইমারি স্কুল রয়েছে এর মধ্য শহীদ মিনার আছে মাত্র ২২১ টি প্রতিষ্ঠান। শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারি কোনো বাজেট না থাকায়, প্রধান শিক্ষক ও কমিটির যৌথ সমন্বয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে পারবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে বরিশাল অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সোহেল মারুফ বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকা বাধ্যতামুলক, তা করতে হবে ম্যানেজিং কমিটির সমন্বয়ে। তাদের শহীদ মিনার নির্মান করতে যদি প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয় তা হলে বরিশাল জেলা প্রশাসক সার্বিক সহযোগীতা করবে বলে তিনি জানান।
|
সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি | রবি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ||||||
২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ | ৮ |
৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ |
১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ | ২২ |
২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ | ২৯ |
৩০ | ৩১ |