বরিশালে পুলিশী বাধা উপক্ষো করে বাসদের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত
|
![]() লিটন বায়েজিদ,বরিশালঃ পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে বাসদ এর সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত। ২৫ জুন বেলা ১১টায় বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুন ও লাল পতাকা সম্বলিত একটি বিশাল মিছিল নগরীর বিভিন্ন পথ অতিক্রম করে নগরীর টাউন হলের সামনে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষে সদর রোড অবরোধ করে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী। এসময় সদর রোডে এম্বুলেন্স ছাড়া সমস্ত যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। করোনা টেস্টে দীর্ঘসূত্রিতা ও হয়রানী বন্ধ, পিসিআর ল্যাব বাড়িয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০০ টেস্ট, করোনা রোগী পরিবহনে বিশেষ এম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা সহ বিভিন্ন দাবিতে এই কর্মসূচি পালিত হয় । এরপর রাস্তা অবরোধ করে ১১টা-১২টা পর্যন্ত সমাবেশ চলতে থাকে। বাসদ বরিশাল জেলা আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি জোহরা রেখা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট বরিশাল জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের মহানগর শাখার প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক বিজন শিকদার, ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদের নেতা মোঃ জসিম, সোনারগাঁও টেক্সটাইল মিলস এর শ্রমিকনেতা নুরুল হক, এংকর সিমেন্ট ফ্যাক্টরির শ্রমিক নেতা শরিফুল ইসলাম প্রমুখ। সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খ্রিস্টান এসোসিয়েশন বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক এলবার্ট রিপন বল্লভ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি বরিশাল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক দুলাল মজুমদার, জাসদ বরিশাল জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশ্রাফুল হক মুন্না, গণসংহতি আন্দোলন বরিশাল জেলা শাখার সদস্য আরিফুর রহমান মিরাজ প্রমুখ। বাসদ আহ্বায়ক ইমরান হাবিব রুমন বলেন, আমরা দীর্ঘ ৫ মাস থেকে করোনা মহামারী মোকাবেলার প্রস্তুতির কথা বলে এসছে। আমরা বরিশালে ১০০০ শয্যার করোনা ইউনিট চালুর দাবি করেছি, দাবি করে এসেছি ১০০ শয্যার আইসিইউ বেডের। আমরা পিসিআর ল্যাবের সংখ্যা বাড়িয়ে রোগীদের হয়রানী এবং দীর্ঘসূত্রিতা কমানোর দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু সরকার কোন দাবির প্রকি কর্ণপাত না করায় সড়ক অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হলাম। মানুষকে বাচাঁনোর এই দাবিগুলো অবিলম্বে মেনা না নেয়া হলে হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচি দিতেও আমরা বাধ্য হবো। বাসদের জেলা সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী বলেন, বাংলাদেশের ৮টি বিভাগের মধ্যে করোনা চিকিৎসার দিক থেকে বরিশাল বিভাগের অবস্থান সর্বনিম্নে। করোনা পরীক্ষার পিসি আর ল্যাব ঢাকায় ৩৮টি, চট্টগ্রামে ৯টি। সদ্যোজাত বিভাগ রংপুর -ময়মনসিংহে ও এই ল্যাব ২টি। কিন্তু বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলার জন্য পিসিআর ল্যাব মাত্র ১টি। সেই একটি মাত্র ল্যাবে দক্ষ টেকনোলজিস্ট না থাকায় পরীক্ষা করাতে গিয়ে রুগীরা হচ্ছেন চরম হেনস্থার শিকার। গতকাল ২৩ জুন একজন রুগী স্যাম্পল দিতে গিয়েছিলেন, তাকে ১৫ জুলাই পরীক্ষা করানোর সিরিয়াল দেয়া হয়েছে। করোনা রোগীদের জন্য নির্ধারিত শয্যার দিক থেকেও বরিশাল সর্বনিম্নে। আইসিই্উ বেড ১৮টি হলেও আইসিইউ বিশেষজ্ঞ মাত্র ১ জন। বরিশাল জেলায় সরকারি-আধাসরকারি-বেসরকারি প্রায় ৩০টি ক্লিনিক-হাসপাতাল থাকলেও শেবাচিম ছাড়া আর কোথাও করোনা রোগীদের জন্য কোন চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী আরও বলেন, একদিকে স্বাস্থ্যখাতে রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে চিকিৎসাক্ষেত্রে অপ্রতুলতা, আরেকদিকে প্রশাসন-সিটি কর্পোরেশন ও স্বাস্থ্য বিভাগের মধ্যে আছে নজিরবিহীন সমন্বয়হীনতা। এখানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বয়স্ক, অসুস্থ্য রোগীদের জন্য করোনা পরীক্ষার স্যাম্পল সংগ্রহের কোন ব্যবস্থা নেই। বরিশালে স্বাস্থ্য বিভাগ বা সিটি কর্পোরেশন কেউই এখন পর্যন্ত করোনা রোগীদের জন্য কোন বিশেষায়িত এ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করতে পারেনি। অনেক সময় পার হয়ে গেছে, কিন্তু মানুষের জন্য ন্যূনতম চিকিৎসাসেবা না পাওয়ায় আমরা আজ সড়ক অবরোধ করছি। আমাদের এই আন্দোলনে অংশগ্রহন, সমর্থন সহযোগিতার জন্য আমরা বরিশালবাসীকে ধন্যবাদ জানাই। আমাদের ৮ দফা দাবি দাবিসমূহ: ১. করোনা টেস্টে দীর্ঘসূত্রিতা ও হয়রানী বন্ধ কর। বরিশালে চঈজ ল্যাব বাড়াও, প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০০ টেস্ট নিশ্চিত কর। প্রতি জেলায় চঈজ ল্যাব স্থাপন কর। ২. বরিশালে করোনা রোগীদের জন্য ১০০০ শয্যা, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ এবং ১০০ ওঈট বেড নিশ্চিত কর। ৩. অবিলম্বে করোনা রোগী পরিবহনে বিশেষ এম্বুলেন্স সার্ভিস চালু কর। বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ কর। ৪. সকল করোনা আক্রান্ত রোগীদের সুচিকিৎসা এবং নিয়মিত কাউন্সিলিং নিশ্চিত কর। সকল লকডাউন বাসায় খাবার, ঔষধসহ প্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ কর। ৫. চিকিৎসক, পুলিশ, সাংবাদিকসহ জরুরী সেবায় নিয়োজিত সকলের ঝুঁকিভাতা, উন্নত নিরাপত্তা পোষাক নিশ্চিত কর। ৬. করোনাকালীন সময়ে সকল এনজিও কিস্তি, বাড়িভাড়া-মেসভাড়া মওকুফে সরকারি বরাদ্দ দাও। ৭. ভূতুরে বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহার কর। পানি বিল, বিদ্যুৎ বিল, হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ কর। করোনাকালীন সময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা চলবে না। ৮. শ্রমজীবী মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ নিশ্চিত কর। সকল প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারিদের বকেয়া বেতন পরিশোধ কর। শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ কর।
|
সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র | শনি | রবি |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৬ | ৭ |
৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ |
১৫ | ১৬ | ১৭ | ১৮ | ১৯ | ২০ | ২১ |
২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২৮ |
২৯ | ৩০ | ৩১ |