বরিশালে ব্যবসায়ীকে অপহরণপুর্বক অমানুষিক নির্যাতন, মামলা দায়ের
|
![]() নিউজ ডেস্কঃ বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদাদাবী অপহরন্ ও নির্যাতনের দায়ে ৮ জন সহ অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।৮-ই ফেব্রুয়ারী বরিশাল বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ভুক্তভুগী মোঃ ইউনুচ মোল্লার স্ত্রী খুরশিদা পারভীন।যার সি আর মামলা নং-১৪/২০২১। মামলার আসামীরা হলেন, বাবুগঞ্জের তিলেরচর গ্রামের মৃত বেলায়েত মুন্সির ছেলে আবুল কালাম মুন্সি, ইউনুচ খানের ছেলে শহিদুল ইসলাম , মৃত সেকেন্দার আলী মোল্লার ছেলে মির্জা মোল্লা ,ভাষাই হাওলাদারের ছেলে সজল হাওলাদার,মৃত সেকেন্দার আলী মোল্লার ছেলে কাওসার মোল্লা, মৃত আজাহার আলী মাঝির ছেলে এনামুল মাঝি, আনিচ জমাদ্দারের স্ত্রী মোসাঃ শিরিন, চুন্নু জোমাদ্দারের স্ত্রী মোসাঃ হেপী। মামলার বিবরনে জানা যায়, বাদী খুরশিদা পারভিনের স্বামী ইউনুচ মোল্লার মালিকানাধীন জমিতে মামলার ১ নং আসামী আবুল কালাম মুন্সি জোর পূর্বক জমির কোন প্রকার মুল্য পরিশোধ না করেই রেজিস্ট্রেশন করে নেয়। এ নিয়ে একাধিকবার বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয়দের মাধ্যমে শালিশ বসলে জমির মুল্য পরিশোধ অথবা রেজিস্ট্রেশনকৃত উক্ত দলিল আসামী কর্তিক বাতিলের স্বিদ্ধান্ত হলেও আসামী আবুল কালা মুন্সি তার তোয়াক্কা না করেই উল্টো বাদীসহ তার পরিবারকে নানান ভাবে হয়রানী করে। এর-ই ফলশ্রুতিতে বাদী এর বিচারের প্রত্যাশায় গত ২৭/১০/২০২০ তারিখে বরিশাল পুলিশ সুপারের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এর-ই পরিপ্রেক্ষিতে আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে স্থানীয় বাবুগঞ্জের জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান তরিকুল ইসলাম তারেক এর ছত্রছায়ায় আসামীরা বাদীর স্বামীর কাছে সকল সম্পত্তি তাদের নামে লিখে দিতে বলে। অন্যথায় ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। পাশাপাশি প্রস্তাবে রাজি না হলে বাদীর স্বামীকে প্রাননাশের হুমকি পর্যন্ত দেয় আসামীরা।এর-ই ফলশ্রুতিতে গত ০৩/০২/২০২১ তারিখে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে আসামীরা ও অজ্ঞাত আরো ৮/১০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা বাদীর বসতঘরের সম্মুখে দা,শাবল,লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন পূর্বক ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বাদীর স্বামী ইউনুচ মোল্লাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে আসামীরা। এছাড়াও ১ নং আসামী আবুল কালাম মুন্সি বাদীর দোকানের ক্যাশ বক্স থেকে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা জোর পুর্বক ছিনিয়ে নেয়।এছাড়াও বাদীর স্বামীকে আসামিরা জোর পূর্বক একটি নীল রংয়ের অটোতে উঠিয়ে অপহরণ করে। পরবর্তীতে আসামীরা গাড়ির মধ্যেই বাদীর স্বামীকে কিল,ঘুসি,সহ নানান ভাবে নির্যায়তন করে।এছাড়াও ১নং আসামী আবুল কালাম মুন্সি ইউনুচ মোল্লাকে শ্বাসরোধে হত্যা চেস্টাও চালায়। এছাড়াও ইউনুচ মোল্লাকে বাবুগঞ্জের ঠাকুরমল্লিক বড় ময়দানের নির্জন এলাকায় নিয়ে ২ ও ৩ নং আসামী যথাক্রমে শহিদুল ইসলাম ও মির্জা মোল্লা লোহার রড দিয়ে তার হাতে ,পায়ে পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করে। এছাড়াও মামলার ৩,৪ ও ৫ নং আসামী মৃত সেকেন্দার আলী মোল্লার ছেলে মির্জা মোল্লা ,ভাষাই হাওলাদারের ছেলে সজল হাওলাদার,মৃত সেকেন্দার আলী মোল্লার ছেলে কাওসার মোল্লা তার বুকের ও পিঠের উপর উঠিয়ে পা দিয়ে নির্যাতন করতে থাকে। পরবর্তীতে ইউনুচ মোল্লাকে অটো গাড়িতে পুনরায় উঠিয়ে বড়ই তলা কমিউনিউটি ক্লিনিকে এর সামনে একটি মাঠে সেই রাতে নিয়ে সেখানে ওতপেতে থাকা ৬,৭,৮নং আসামি রড দিয়ে তাকে পিটিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায়।পরে ইউপি চেয়্যারম্যান তরিকুল ইসলাম তারিকের নির্দেশে ইউনুচকে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে গেলে আনুমানিক রাত ৩ টার দিকে আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র হতে এস আই নাসির উদ্দিন বাদিকে ফোনে জানায় ইউনুচ মোল্লাকে পুলিশ জাহাংগীর নগর ইউনিয়ন পরিসদের সামনে থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে তিনি আগরপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে রয়েছে। পরবর্তীতে সেখানে বাদী খুরশিদা পারভিন উপস্থিত হয়ে তার স্বামীকে গুরুত্ব আহত অবস্থায় পেলে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতেলে সিসিইউতে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। এ ঘটনায় বাদীর পরিবার আসামীদের থেকে এখনো নানান ভাবে হয়রানীর শিকার হচ্ছে ও প্রান সংশয়ের আশঙ্কায় ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে পড়েছেন । এ বিষয়ে বাদী প্রশাসনের নিকট হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। উল্লেখ্য, উল্লেখিত ঘটনায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি গত ০৭/০২/২০২১ তারিখে বাদী হয়ে ভুক্তভুগী মোঃ ইউনুচ মোল্লার স্ত্রী মোসাঃ খুরশিদা পারভিন বরিশাল পুলিশ সুপারের কাছে পূনরায় অভিযোগ দিয়েছেন।
|