বরিশাল – ভোলা হবে দেশের দীর্ঘতম সেতু
|
![]() নিউজ ডেস্কঃ দ্বীপ জেলা ভোলাকে বরিশালের সঙ্গে যুক্ত করতে তেঁতুলিয়া নদীর ওপর দিয়ে দেশের দীর্ঘতম সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করছে সরকার। ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘের এই সেতুর ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। যা নির্মাণাধীন পদ্মাসেতুর (৬.১৫ কিলোমিটার) ব্যয়ের প্রায় এক তৃতীয়াংশ। তবে, সেতুটির নকশা চূড়ান্ত হওয়ার পর এই ব্যয় আরও বাড়তে পারে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) জানিয়েছে, তারা সেতু নির্মাণের জন্য জরিপ করেছে এবং সেতুর সম্ভাব্য স্থান নির্ধারণ করেছে। সেতুটি নির্মিত হলে দক্ষিণের এই দুটি জেলার মধ্যে যাতায়াতে সময় কম লাগবে এবং ভোলা থেকে গ্যাস সরবরাহ করা সহজতর হবে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জরিপ ও আলোচনার ভিত্তিতে ভোলার ভেদুরিয়া ফেরিঘাট এবং বরিশালের লাহারহাট ফেরিঘাট বরাবর সেতুটি বানানোর জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। তারা জানিয়েছেন, ১০ কিলোমিটার সেতুর মধ্যে প্রায় ৩ কিলোমিটার শ্রীপুর চরের ওপর দিয়ে যাবে। বিবিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী মুহাম্মদ ফেরদৌস গণমাধ্যমকে বলেন, এই সেতু দিয়ে ভোলা থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস আনার সুযোগ সৃষ্টি হবে। সেতুটি দিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করার সুযোগ থাকবে। এর আগে ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে তৎকালীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেছিলেন, ভোলার শাহবাজপুর গ্যাস ক্ষেত্রের প্রায় ৩২ কিলোমিটার উত্তরে ভেদুরিয়া ইউনিয়নে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের সন্ধান পাওয়া গেছে। তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেছিলেন, গ্যাসের সন্ধান পাওয়ার পর, ভোলার গ্যাসের রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ঘনফুটে। ব্যবসা ও যোগাযোগের উন্নয়নে সেতু: বরিশাল বিভাগের পূর্ব অংশ ভোলা জেলা। তেঁতুলিয়া নদী একে মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা করেছে। প্রায় ৩ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটার আয়তন এবং প্রায় ২০ লাখ ৩৭ হাজার জনসংখ্যার জেলা ভোলার সঙ্গে বরিশালের সরাসরি স্থল যোগাযোগের ব্যবস্থা নেই। ভোলা যাওয়ার একমাত্র উপায় নদীপথ। নদীপথে বরিশাল থেকে ভোলার ভেদুরিয়া যেতে লঞ্চে প্রায় দুই ঘণ্টা এবং স্পিডবোটে প্রায় ৪০ মিনিটের মতো সময় লাগে। ভেদুরিয়া থেকে ভোলা সদর উপজেলায় যেতে প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে। বরিশালের লাহারহাট ফেরিঘাট থেকেও লঞ্চে ভেদুরিয়া যাওয়া যায়। এই ঘাট থেকে ভোলার ইলিশঘাট পর্যন্ত একটি ফেরি চলাচল করে। সেতুর সম্ভাব্যতা জরিপের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোলা থেকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন নৌকা ও লঞ্চের উপর নির্ভরশীল। যা এই জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রভাব ফেলছে। ভোলার একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা দীপক কুমার অধিকারী। তার পরিবারের সদস্যরা বরিশালে থাকেন। তিনি জানিয়েছেন, “যদি সেতু হয় তাহলে আমার মতো অনেকেই প্রতিদিন বরিশাল থেকে যাতায়াত করে কাজ করতে পারবেন।” একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মানিক গুপ্ত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে ফেরি চলাচলে সমস্যা হলে মাঝে-মাঝেই তারা বরিশাল থেকে ভোলায় ওষুধ পাঠাতে সমস্যায় পড়েন। |