২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বাস্তবায়নের রূপরেখা
|
![]() মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান | ঢাকা |
স্বল্পোন্নত থেকে মধ্য আয়ের দেশ হওয়ার পথে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। তবে সরকারের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। সেই উন্নত বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার নেমে আসবে তিন শতাংশে। চরম দারিদ্র্যের হার হবে ১ শতাংশেরও কম। গ্রাম-শহরের বৈষম্য কমবে। ৮০ শতাংশ মানুষ শহুরে জীবনযাপনের সব সুবিধা পাবে। বাড়বে গড় আয়ু, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত এই বাংলাদেশ গড়ে তোলার কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে সরকার। সেই রূপরেখা অনুযায়ী অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এর বাস্তবায়ন। এমন আরও তিনটি, অর্থাৎ মোট চারটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে তা চূড়ান্ত রূপ পাবে। চূড়ান্ত এই রূপরেখার শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নে রূপরেখা: বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’। সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) চেয়ারপাসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এনইসি বৈঠকে এই পরিকল্পনাটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে এই রূপরেখা তথা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষের এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন পরিকল্পনাটি তৈরির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম। বিশেষ অতিথি থাকবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) সূত্র জানায়, প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় রয়েছে ১২টি অধ্যায়। এর মধ্যে যেমন শিল্প ও বাণিজ্য, কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মতো বিষয় রয়েছে, তেমনি রয়েছে সুশাসন, মানব উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশের মতো বিষয়গুলোও। এর মধ্যে সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো আছে, যাতে প্রতি অর্থবছরের অর্থনীতির সূচকগুলো লক্ষ্যমাত্রা বিস্তরিতভাবে দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সাল পর্যন্ত বাস্তবায়নাধীন প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা, তথা রূপকল্প ২০২১-এর ধারাবাহিকতায় ২০ বছর মেয়াদি দ্বিতীয় এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ থেকে প্রণয়ন করা এই প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় ২০৪১ সালে মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ুষ্কাল ৮০ বছর ধরা হয়েছে। প্রেক্ষিত পরিকল্পনার প্রক্ষেপণে বলা হয়েছে, ২০৩১ সালে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৯ শতাংশে। সেটি আবার বাড়তে বাড়তে ২০৪১ সালে গিয়ে হবে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। একইসঙ্গে চরম দারিদ্র্যের হার ২০২০ সালে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে কমে ২০৩১ সালে পৌঁছাবে ২ দশমিক ৩ শতাংশে। সেটি পরিকল্পনার শেষ বছর ২০৪১ সালে কমে দাঁড়াবে ১ শতাংশের নিচে। অন্যদিকে দারিদ্র্যের হার বর্তমান বছরের ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমে ২০৩১ সালে দাঁড়াবে ৭ দশমিক শূন্য শতাংশে । পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শেষে ২০৪১ সালে এ হার নেমে যাবে ৩ শতাংশের নিচে।
|