যৌতুকের যন্ত্রণায় অতিষ্ট রোজিনা
|
রাইসুল ইসলাম ফুল রাজিবপুর কুড়িগ্রামঃ কুড়িগ্রামের রাজীবপুরে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির অমানুষিক নির্যাতনের শিকার গৃহবধু রোজিনা খাতুন বিচার চায়। যৌতুকের দাবিতে স্বামী শফি আলম কারনে অকারনে, উঠতে বসতে নির্যাতন চালায় রোজিনার ওপর। স্বামীর সঙ্গে নির্যাতনে অংশ নেয় শ্বাশুরি সুফিয়া খাতুনও। সর্বশেষ গত এক মাস আগে ৪ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয় স্ত্রীকে। এরপর আর কোনো খোঁজ খবর নেয়া হয়নি। নির্যাতনের শিকার রোজিনা খাতুন তার তিন সন্তান নিয়ে এখন বাবার বাড়িতে অবস্থান করছে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধু রোজিনা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, ‘কয়েক মাস আগে আমার বাবা মারা যায়। ৪লাখ টাকা যৌতুকের জন্য স্বামী মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। তার দুই দিন আগে শ্বাশুরীও আমাকে মারধোর করে। রাতে খাবার দিত না। কারনে অকারনে আমাকে খুব কষ্ট দিত। মাঝে মাঝেই খাবার না দিয়ে যন্ত্রণা দিত আমাকে। বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার সময় বলে দেয় ৪লাখ টাকা না আনলে তোকে তালাকা দিয়া দিব। ছোট ছোট তিনটা সন্তান রয়েছে আমার। এক মাস থেকে বাবার বাড়িতে আছি একবারের জন্য খোঁজখবরও নেয়নি।’অভিযোগে জানা গেছে, ১৫ বছর আগে পারিবারিক ভাবে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার পান্তামমারী গ্রামের সেফাত আলীর মেয়ে রোজিনা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় রাজীবপুর উপজেলার বালিয়ামারী ব্যাপারি পাড়া গ্রামের নুর মোহাম্মদ’র পুত্র শফি আলমের। বিয়ের সময় একজোরা গরু ও নগদ ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয় জামাইকে। বিয়ের কিছু দিন পর শুরু হয় নির্যাতন। যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার রোজিনা খাতুন বাবার বাড়ি থেকে দু’দফায় ১ লাখ টাকা নিয়ে তুলে দেয় স্বামীর হাতে। কিছু ভালো থাকার পর আবার শুরু হয় নিযার্তন। নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করেও দেয়া হয়। এ নিয়ে পারিবারিক ভাবে একাধিকবার মিমাংশা করেও দেয়া হয়। কিন্তু যৌতুক লোভি শফি আলমের যৌতুক চাহিদা শেষ হয় না। নির্যাতনের শিকার রোজিনার মা বলেন, ‘তাদের ঘরে তিনটি সন্তান রয়েছে। মেয়ের বাবাও মারা গেছে। এখন নতুন করে ফন্দি করছে ৪ লাখ টাকা যৌতুক দিতে হবে। কিন্তু অত টাকা কিভাবে দিব। আমার আরো সন্ত্মান রয়েছে। এক মেয়ের পিছে জমি জিরাত সব শেষ করলে অন্য ছেলেমেয়েরা পথে বসবে। তারপরও মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে আরো এক লাখ টাকা যোগার করেছি কিন্তু মেয়ের শ্বশুর বাড়ির চাহিদা ৪ লাখ টাকাই দিতে হবে। এ অবস্থায় আমরা বড়ই বিপদে আছি।’অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে যৌতুক লোভি শফি আলম বলেন, ‘মাইনসে শ্বশুর বাড়ি থেকে কত কিছু পায়। আর আমি মাত্র ৪ লাখ টাকা চেয়েছি। এই টাকা দিয়ে একটা সিএনজি অটো রিক্সা কিনব। সেটাই দিচ্ছে না। টাকা না দিলে আমি বউ রাখব না। সেটা সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছি।’
|