ঈদকে সামনে রেখে লালপুরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে কামার শিল্পের কারিগররা
|
![]() বুলবুল আহাম্মেদ নাটোর প্রতিনিধি। ঈদকে সামনে রেখে লালপুরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যস্ত সময় পার করছে কামার শিল্পের কারিগররা। লালপুরের বিভিন্ন হাট বাজার ঘুরে দেখা যায় কামারদের দোকানগুলোতে বেচাকেনা ও মেরামত কাজে উপচে পড়া ভিড়। সকাল থেকে সারা রাত পর্যন্ত দা, ছুরি, বঁটি, চাপাতি, হাসুয়া তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে কামার শিল্পের কারিগররা। উপজেলায় প্রায় ২ শতাধিক কামার পরিবার রয়েছে। বর্তমান আধুনিকতার ছোঁয়ায় কামারদের তেমন কোনো কাজ না থাকায় এসব পরিবারের অনেকেই তাদের বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছে। উপজেলার লালপুর কলেজ মোড়, লালপুর বাজার, জোতদৈবকী, বিলমাড়ীয়া বাজার, সালাম পুর বাজার, আব্দুলপুর বাজার, গোপালপুরবাজার, ওয়ালিয়া বাজার, চংধুপইল বাজার, চাঁনপুর বাজার, লক্ষীপুর বাজার, দুয়ারিয়া বাজার, কদিমচিলান বাজার, কচুয়া বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে কামারদের দা, ছুরি, বঁটি চাপাতি হাসুয়া তৈরিতে ব্যস্ততা যেন চোখে পড়ার মতো। উপজেলার লালপুর কলেজ মোড়ের নব কামার জানান এখন আর আগের মতো কাজ নাই, ঈদের সময় ছাড়া কোনো কাজ থাকে না। তাই সারা বছর সংসার চালাতে খুব বেগ পেতে হয়। জোতদৈবকী গ্রামের রবি ও প্রশান্ত কম’কার জানান সারা বছরেই টুকটাক কাজ হয়, তবে ঈদের সময় তুলনামুলক একটু বেশি কাজ হয়। লালপুর বাজারের দুলাল কম’কার জানান সারা বছর দোকান খুলে বসে থাকেন। তেমন কোনো কাজ কর্ম থাকে না কোনো প্রকারে খেয়ে না খেয়ে সংসার চলে। তারা কুরবানি ঈদের অপেক্ষায় থাকেন। কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে মুসলমাদের প্রতিটি ঘরে ঘরে নতুন কিংবা পুরনো দা, ছুরি ও বঁটি চাপাতি হাসুয়া মেরামত করতে হয়। তাই এ সময় দোকানে অনেক কাজের ভিড় থাকে। তাই আমরা দিনরাত্রি কাজ করলে আমাদের পরিবারের অভাব কাটিয়ে কিছু দিনের জন্য সচ্ছলতা আসে। জাতীয় সাংবাদিক সংস্থা লালপুর উপজেলা শাখার সভাপতি সালাউদ্দিন বলেন ঈদে পশু কুরবানির জন্য দা, ছুরি মেরামত করতেই হবে, এই সুযোগে কোন কোন কামার বেশী দাম নিচ্ছে, কিন্তু কিছু করার নেই প্রয়োজনের তাগিদে মেরামত করতেই হবে। লালপুর উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি ও লালপুর বাতা পত্রিকার সম্পাদক আব্দুল মুত্তালেব রায়হান জানান, পশু কুরবানির জন্য দা, ছুরি মেরামত করতেই হবে, কোন কোন কামার চড়া দাম নিচ্ছে, তবুও প্রয়োজনের তাগিদে মেরামত করতেই হচ্ছে। দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের ভেল্লাবাড়ীয়া এলাকার সমাজসেবক, শিক্ষক, সাহিত্যিক, ক্রিড়া সংগঠক ও সাংবাদিক আব্দুর রশিদ মাষ্টার বলেন বর্তমানে বাংলাদেশে তাঁতশিল্প, মৃৎশিল্প, কাঁসা শিল্প প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে কামার শিল্প একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
|