নিউজ ডেস্কঃ ১৫ আগষ্টের পর থেকে বাংলাদেশে বহু দলীয় গণতন্ত্রের নামে একটা কালো অধ্যায় রচনা করে গিয়েছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘তখনকার সময়ে ক্ষমতার বদল হতো মিলিটারি ডিক্টেটরদের ইশারা অনুযায়ী।’
জিয়াউর রহমানের আমলে নির্বাচনে জনগণের ভোট দেয়ার অধিকার ছিল না উল্লেখ করে সংসদ নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের নামে তখন প্রহসন চলেছে দেশে। ভোট চুরির অপরাধে বিএনপির প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ পর্যন্ত করতে হয়েছিল। পরবর্তীতে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে দুর্নীতির জন্য বিএনপি নেত্রী সাজা প্রাপ্তও হয়েছিলেন। এর মধ্যে দিয়েই বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার প্রচেষ্টা আমাদের সবসময়ই ছিল।’
মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) সকালে সংসদে চলমান শীতকালীন অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক কথা হয়েছে; সমালোচনাও কম হয় নি। কিন্তু আমার দুঃখে হাসি পায় এই ভেবে যে, যাদের গায়ে এত দুর্নীতির ছাপ, যারা ক্ষমতায় থাকাকালে (২০০১ থেকে ২০০৬) পাঁচ-পাঁচবার দেশ দুর্নীতিতে চ্যাস্পিয়ন হয়েছে। এতিমের অর্থ নিয়ে দুর্নীতির দায়ে যারা অভিযুক্ত, দশ ট্রাক অস্ত্র পাচার করতে গিয়ে যাদের নামে মামলা হয়, প্রকাশ্য দিবোলোকে গ্রেনেড হামলা করে যারা আমাকে হত্যাচেষ্টার অপরাধের মামলায় যারা সাজাপ্রাপ্ত। এরা যখন কোনো দলের নেতৃত্বে থাকে, সেই দল কিভাবে মানুষের জন্য কাজ করবে, সেটাই আমার প্রশ্ন মাননীয় স্পিকার !’
সংসদ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, ‘বিএনপি’র তো আজকে সেই অবস্থা। পলাতক আসামি যখন তাদের নেতা হয়। সেই নেতৃত্ব সংকটে তারা জনগণের আস্থা-বিশ্বাস কোনোটাই অর্জন করতে পারে নি। তারা যতোই বক্তৃতাবাজি করুক মানুষের বিশ্বাস আস্থাটা সরে গেছে, সেটা আর নাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ এখন আওয়ামী লীগের কাছ থেকে যেহেতু সেবা পেয়েছে; দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। এসবের মাধ্যমে দেশের মানুষের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করেছে আওয়ামী লীগ। যার প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই, দেশে চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে।’
বিএনপি গুজব ও মিথ্যা কথা বলে, অসত্য তথ্য দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। এটি তাদের জন্মগত চরিত্র বলেও কড়া সমালোচনা করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি আইনসভায় বলেন, ‘তাদের কথা তারা বলেই যাবে। আমাদের কাজ আমরা করে, জনগণকে সেবা দিয়েই যাবো। তাদের তো কথাটা বলতে দিতে হবে! কথা পেটের মধ্যে থাকলে গুড়গুড় করবে। বলে ফেললে চলে গেল; বাতাসে উড়ে যাবে।’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে সমালোচনা ইস্যুও। তিনি জানান, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে এতো কথা! অথচ এইরকম একটা নিজেদের অর্থায়নে করেছি আমরা। সেটার প্রশংসা তো দিতেই পারলো না। উল্টো বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিল, জোড়াতালি দিয়ে এই সেতু বানানো হচ্ছে, তাই এতে উঠবেন না। কিন্তু আমার প্রশ্ন, নদীটা তাহলে কিভাবে পার হবে? তাহলে তো নৌকায় চড়তে হবে। উপায় তো নাই। আমি বলবো যে, আমাদের নৌকা অনেক বড়, কোনো অসুবিধা নাই। সবাইকেই নেব আমরা, তবে বেছে নেব। কেউ যাতে নৌকায় উঠে, নৌকা ফুটো না করে দেয়।’
আওয়ামী লীগ সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনায় দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর তার সমাপনী ভাষণে বলেন, ‘দেশের একটি মানুষও গৃহহীন ও ঠিকানাবিহীন থাকবে না।’
সংবাদটি পঠিত :
১৩