বরিশালের বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে অবৈধ ইটভাটার বাণিজ্য, হুমকির মুখে পরিবেশ।
|
![]() বিশেষ প্রতিনিধিঃ বরিশালের বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে অবৈধ ইটভাটার জমজমাট বাণিজ্য। ইট ভাটার কালো ধোঁয়া প্রাণ, প্রকৃতি ও পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ঘটাচ্ছে। প্রকাশ্যে ক্রমাগত বনের কাঠ পুড়লেও নিয়ন্ত্রন করছে না প্রশাসন।। হুমকি মুখে পরেছে পরিবেশ ও জন জীবন। সরকারী আইন কানুনের তোয়াক্কা না করে ইট ভাটা মালিকগন তাদের বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক আইন মেনে ইট ভাটা চালালোন কড়া নির্দেশ থাকলেও তা মানছেন না ইট ভাটা মালিকগন। বিভিন্ন জায়গা একে গড়ে উঠেছে প্রায় শতাধীক ইট ভাটা। এ সকল ইটভাটা বেশির ভাগ অবৈধ । মলিকানা , সরকারী খাস খতিয়ান ভূক্ত ফসলী জমীতে। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করছে। ইট ভাটার মালিকরা অবৈধ ভাবে বছরের পর বছর চালিয়ে যেতে পারছেন তাদের ইট ভাটার অবৈধ ব্যবসা। এ সকল ইটভাটার মধ্যে বেশির ভাগই অনুমোদন নেই । মালিকানা , সরকারী সম্পত্তি এবং সরকারের ১ নং খাস খতিয়ানে এ সকল ইট ভাটা স্থাপিত হয়েছে। অনুমোদনহীন ইট ভাটা গুলো আইনের তোয়াক্কা না করে বসত বাড়ি এলাকায়, কৃষি জমিতেই গড়ে উঠা এ সকল ভাটা। কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ (লাকড়ি)। বসানো হয়েছে অবৈধ করাত কল। যা থেকে সরকারী চোরাই কাঠ/গাছ যাচ্ছে ইট ভাটায়। তবে এ বিষয়ে বন বিভাগের ভুমিকা নেই কোথাও। রাস্তার ধারে আইনের তোয়াক্কা না করে দিন রাত অবৈধ ইটভাটা চললেও ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা । ইট ভাটায় টিন বা ড্রামের চিমনি ব্যবহারের সম্পূর্ণ নিষেধ আছে ।এটি আইনের গুরুতর লঙ্ঘন। মূলত ইট ভাটার মালিকেরা খরচ বাঁচাতে সস্তায় এসব নিম্ন মানের ড্রামের চিমনি ব্যবহার করে।এতে পরিবেশের অপূরণীয় ক্ষতি হলেও প্রশাসন নিশ্চুপ আছে। টিনের চিমনি ব্যবহার কারণে আবাসিক ও সৃজন করা বনের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।প্রচলিত আইনকে তোয়াক্কা না করে দিনের পর দিন প্রশাসনের চোখের সামনে ইট ভাটা চললেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না বলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা। শুধু টিনের চিমনি নয় বনের কাঠ,কৃষির জমির উপরিভাগের মাটি ব্যবহার করে আইনের নীতিমালা লঙ্ঘন করছে ইটভাটা মালিকেরা। অবৈধ ইটভাটায় টিনের ড্রামের চিমনি ব্যবহার করার কারণে পরিবেশের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় নেমে আসছে।টিনের ড্রামের চুল্লি ব্যবহারের কারণে আশেপাশের এলাকায় পরিবেশগত বিপর্যয় হয়। এসব চুল্লি থেকে অতি মাত্রায় কার্বন নিঃসরিত হয়।এছাড়া ড্রামের চুল্লি বা চিমনি থেকে তাপ নিঃসরণের ফলে আশে পাশের গাছ পালা হলুদ বর্ণের হয়ে যায়।এছাড়া ফলদ বৃক্ষে ফল আসে না । ইট ভাটার আশে পাশের আবাসিক এলাকায় জনস্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হয়। ইট ভাটায় ড্রামের চুল্লি ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষেধ থাকলেও মানছে না কেউ।আবাসিক এলাকা থেকে অন্তত এক কিলোমিটার দূরে ইট ভাটা স্থাপনের কথা থাকলেও কেউ তা মানছেনা । বাংলা চিমনির মাধ্যমে পোড়ানো হচ্ছে ইট। ফলে ভাটা এলাকার আসে পাশে বিভিন্ন বনজ ও ফলজ গাছ এবং কালো ধোঁয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও পরিবেশ, আবার কোথাও বাস্তচ্যুত হচ্ছে সাধারণ গরিব কৃষক। ভাটার কালো ধোয়ার ফলে জনজীবন ও পরিবেশ পড়ছে হুমকির মুখে। যার ফলে অবাধে নিধন হচ্ছে গাছ, উজার হচ্ছে বনজ সম্পদ এবং নি:শেষ হচ্ছে ফসলী জমি। বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফলজ, বনজ গাছ সহ তাল, নারকেল, খেজুরসহ অনেক ফলগাছ। খেজুর গাছ বিলীন হওয়ায় হারাতে বসেছে গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্য শীতকালীন খেজুরের রস। ইট ভাটায় কয়েকজন শ্রমিক জানান,দিন রাত এখানে কাজ চলে। বিভিন্ন রকমের মূল্যবান কাঠও পোড়ানো হয়। তবে ই্টভাটা কয়লা ব্যবহারের কথা থাকলেও তা ভুলতে বসেছে ইট ভাটার মালিকেরা।’বনের কাঠ ব্যবহারে বন বিভাগে বিধি নিষেধ থাকলেও কাঠ কাটা নিয়ন্ত্রণের কোন উদ্যোগ নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, আমাদের ফিল্ডওয়ারে কাজ চলছে, আমরা অবৈধ ইটভাটা বন্ধের জন্য সর্বোচ্চ পদক্ষেপ চলছে। তিনি আরোও বলেন,অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হবে এবং অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিব। |